প্রতিদিন আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা মানসিকভাবে সুস্থ নন। কিন্তু আমরা প্রায়ই বুঝতে পারি না যে, এই মানুষগুলো মানসিক রোগে ভুগছেন। তাই প্রশ্নটা আসে—মানসিক রোগী কারা? লক্ষণ কি? চলুন সহজ ভাষায় বিস্তারিতভাবে জেনে নিই মানসিক রোগ সম্পর্কে।
মানসিক রোগী কারা বা কাকে বলে?
মানসিক রোগী হলেন সেই ব্যক্তি যাঁর মানসিক স্বাস্থ্য গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়েছে এবং তিনি স্বাভাবিক চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণ বজায় রাখতে পারছেন না। এটা হতে পারে ডিপ্রেশন, স্কিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, বা অন্য যেকোনো মানসিক অবস্থা।
কেন হয় মানসিক সমস্যা?
- বংশগত কারণ
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
- শারীরিক আঘাত বা ট্রমা
- নেশাজাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার
- পারিবারিক অসন্তোষ
- দীর্ঘ সময় একাকীত্বে থাকা
রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665
মানসিক রোগীর লক্ষণ
একজন মানসিক রোগীকে চেনার উপায় তার আচরণ ও মানসিক পরিবর্তনের মাধ্যমে। এই লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে পারে, আবার হঠাৎ করেও দেখা দিতে পারে। নিচে বিস্তারিতভাবে প্রতিটি লক্ষণ ব্যাখ্যা করা হলো:
একাকীত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা
মানসিক রোগীরা অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ থেকে দূরে থাকতে চায়। তারা পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক কমিয়ে দেয় এবং একা থাকতে চায়। এ ধরনের একাকীত্ব ধীরে ধীরে বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী মন খারাপ থাকা
যদি কেউ দিনের পর দিন মন খারাপ রাখে, বিষণ্ন অনুভব করে এবং কোনো কিছুর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তবে তা মানসিক রোগের একটি প্রধান লক্ষণ হতে পারে।
স্বাভাবিক কথা বলতে অনীহা
মানসিক চাপের কারণে অনেকে স্বাভাবিক কথোপকথন এড়িয়ে চলে। তারা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে চায় না বা কোনো কথায় সাড়া দেয় না।
অকারণে ঝগড়া করা
অল্প কিছুতেই রেগে যাওয়া, বারবার ঝগড়া শুরু করা এবং প্রতিক্রিয়া বেশি দেখানো মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে যেসব রাগের কারণ যুক্তিহীন, তা নিয়ে সতর্ক হওয়া দরকার।
হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠা
কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই হঠাৎ অত্যন্ত রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হয়ে যাওয়া অনেক সময় মানসিক অস্থিরতার দিক নির্দেশ করে। এটি আশেপাশের মানুষের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
গায়েবি আওয়াজ বা কথা শোনা
অনেকে অভিযোগ করে যে তারা এমন কিছু শুনছে যা অন্য কেউ শুনতে পাচ্ছে না। এটি বাস্তবতার সাথে বিচ্ছিন্নতার লক্ষণ, যাকে স্কিজোফ্রেনিয়া বা সাইকোসিসের উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়।
অকারণে মানুষকে সন্দেহ করা
বিশেষ কোনো যুক্তি ছাড়াই কাছের মানুষদের প্রতি সন্দেহ তৈরি হওয়া, তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তোলা, বা চক্রান্ত ভাবা মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
প্রাত্যহিক কাজ করা বন্ধ করা
দৈনন্দিন কাজ যেমন খাওয়া, গোসল করা, ঘুমানো, কাজ করা ইত্যাদিতে অনাগ্রহ বা অক্ষমতা প্রকাশ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির লক্ষণ।
আনন্দের অভাব দেখা দেওয়া
আগে যেসব কাজে আনন্দ পেতেন, সেগুলোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যাওয়া মানসিক বিষণ্নতার একটি বড় লক্ষণ। রোগী ক্রমশ নিরুৎসাহী হয়ে ওঠে।
স্বাভাবিক ঘুমের মাত্রার ব্যাঘাত
মানসিক রোগীদের মধ্যে ঘুম নিয়ে সমস্যা খুব সাধারণ। কারো ঘুম আসতে চায় না (ইনসমনিয়া), আবার কেউ ঘুমিয়েই থাকতে চায়। দুটোই অসুস্থতার লক্ষণ।
অনেক সময় সাধারণ আচরণের পরিবর্তন বুঝে একজন মানসিক রোগীকে চেনা যায়। কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখে আপনি অনুমান করতে পারেন:
- আত্মবিশ্বাস হঠাৎ কমে যাওয়া
- অতীত স্মৃতি নিয়ে সব সময় বিচলিত থাকা
- অল্প কথায় রেগে যাওয়া
- ভয় বা আতঙ্কে থাকা
- নিঃসঙ্গতা খোঁজা

মানসিক রোগী চেনার উপায়
অনেক সময় একজন মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগলেও তিনি নিজেই তা স্বীকার করতে চান না, অথবা আশেপাশের মানুষরাও বিষয়টি বুঝতে পারেন না। তবে কিছু আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে একজন মানসিক রোগীকে চেনা সম্ভব। নিচে এই লক্ষণগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
আত্মবিশ্বাস হঠাৎ কমে যাওয়া
যারা আগে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তারা হঠাৎ নিজেকে অযোগ্য বা ব্যর্থ মনে করতে শুরু করেন। নতুন কোনো কাজ শুরু করতে ভয় পান, ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধাগ্রস্ত হন। এটি বিষণ্নতা বা উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার সূচক হতে পারে।
অতীত স্মৃতি নিয়ে সব সময় বিচলিত থাকা
অনেক সময় মানসিক রোগীরা অতীতের কোনো ঘটনা বা দুঃস্মৃতিকে বারবার মনে করে কষ্ট পেতে থাকেন। তারা ভবিষ্যতের দিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র পুরনো ভুল, আঘাত বা ব্যর্থতা নিয়েই ভাবতে থাকেন।
অল্প কথায় রেগে যাওয়া
একজন ব্যক্তি হঠাৎ করেই খুব ছোট বা তুচ্ছ কারণে রেগে যান, যা তার স্বাভাবিক আচরণের সঙ্গে মেলে না। এই রাগ অনেক সময় নিজের উপরেও পড়ে এবং আত্মঘাতী চিন্তাও জন্ম নিতে পারে।
ভয় বা আতঙ্কে থাকা
যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রায়শই অকারণে অস্থির থাকেন। অন্ধকার, নির্জনতা, কিংবা লোকজনের সামনে যেতে ভয় পান। কেউ যেন সব সময় তাদের ক্ষতি করবে—এমন ভাবনাও থাকে অনেকের মনে।
নিঃসঙ্গতা খোঁজা
পরিবার বা সমাজের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চলা এবং নিজের মতো একা থাকতে চাওয়া একটি বড় লক্ষণ। অনেক সময় নিঃসঙ্গতা মানসিক অবসাদকে আরও গভীর করে তোলে। একাকীত্ব এবং নিরবতা প্রিয় হয়ে ওঠে, যা মানসিক বিচ্ছিন্নতার ইঙ্গিত হতে পারে।
মানসিক রোগীর খাদ্য
মানসিক রোগীর সুস্থতার ক্ষেত্রে খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্কের কাজ সচল রাখা, মন ভালো রাখা এবং দেহের হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুষম খাদ্য অত্যন্ত সহায়ক। মানসিক রোগীদের জন্য যেমন কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টিকর খাদ্য প্রয়োজন, তেমনি কিছু খাবার থেকে দূরে থাকাও জরুরি।
যে খাবারগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী:
ফলমূল (কলা, আপেল, আঙ্গুর)
ফলমূল যেমন কলা, আপেল ও আঙ্গুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক চিনিতে সমৃদ্ধ। কলা সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়িয়ে মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। আপেল ও আঙ্গুর শক্তি জোগায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
সবজি (ব্রকলি, পালং শাক)
সবুজ শাকসবজি, বিশেষ করে ব্রকলি ও পালং শাক, মানসিক স্থিরতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোতে ফোলেট, ভিটামিন বি এবং আয়রন থাকে যা স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে।
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ (রুই, কাতলা, টুনা)
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত মাছ যেমন রুই, কাতলা ও টুনা মানসিক উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। এসব মাছ মস্তিষ্কের কোষকে সজীব রাখে এবং মনোসংযোগ বৃদ্ধি করে।
বাদাম ও বীজ (আখরোট, তিল, চিয়া বীজ)
বাদামে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন, যা মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে। চিয়া বীজ, তিল ও আখরোট স্নায়ু শক্তিশালী করে এবং বিষণ্নতা হ্রাস করে।
পূর্ণ শস্য (লাল চাল, ওটস, ব্রাউন ব্রেড)
পূর্ণ শস্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা মুড ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। লাল চাল, ওটস ও ব্রাউন ব্রেড শরীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে, ফলে মানসিক স্থিরতা বজায় থাকে।
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত
অতিরিক্ত চিনি
অতিরিক্ত চিনি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি দিলেও পরবর্তীতে ক্লান্তি, উদ্বেগ এবং মুড সুইং-এর কারণ হতে পারে। এটি মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
ক্যাফেইন জাতীয় খাবার (চা, কফি, এনার্জি ড্রিঙ্ক)
ক্যাফেইন মস্তিষ্কে উত্তেজনা তৈরি করে এবং ঘুমের সমস্যা (ইনসমনিয়া) সৃষ্টি করতে পারে। মানসিক রোগীদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ।
প্রসেসড ফুড (চিপস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, ফাস্টফুড)
এই খাবারগুলোতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি, ট্রান্স ফ্যাট ও কৃত্রিম উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত লবণ
লবণ বেশি খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে পারে, যার ফলে মনোসংযোগ কমে এবং চিন্তার ভারসাম্য নষ্ট হয়।
মানসিক রোগীর চিকিৎসা
যেকোনো মানসিক রোগের চিকিৎসা সময় মতো শুরু করাই উত্তম। চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, রোগী তত দ্রুত সুস্থ হওয়ার পথে ফিরে আসে। মানসিক রোগের চিকিৎসা একমাত্র একটি পদ্ধতিতে নয়, বরং এটি একটি সম্মিলিত প্রক্রিয়া যার মধ্যে রয়েছে মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক সহায়তা। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:
কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপি
সাইকোথেরাপি মানসিক রোগ চিকিৎসার অন্যতম প্রধান উপায়। এখানে রোগী একটি নিরাপদ পরিবেশে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলেন। তারা রোগীর জীবনের সমস্যা, মানসিক চাপ, অতীতের ট্রমা, এবং আবেগ নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। ধাপে ধাপে বিভিন্ন থেরাপি পদ্ধতি (যেমন: CBT, DBT) অনুসরণ করে রোগীর চিন্তাভাবনা এবং আচরণে পরিবর্তন আনা হয়। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে, সম্পর্ক উন্নয়ন করতে ও নেতিবাচক মানসিকতা দূর করতে সহায়তা করে।
ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা
অনেক মানসিক রোগেই কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন: বিষণ্নতার জন্য অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, উদ্বেগজনিত সমস্যায় অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ড্রাগ, স্কিজোফ্রেনিয়ার ক্ষেত্রে অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এসব ওষুধ রোগীর মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে এসব ওষুধ অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত এবং নিয়মিত ফলোআপ করাও জরুরি।
গ্রুপ থেরাপি
গ্রুপ থেরাপি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একাধিক রোগী একত্রে কাউন্সেলরের তত্ত্বাবধানে আলোচনা করে। এতে রোগীরা একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারে এবং বুঝতে পারে যে তারা একা নয়। এটি একধরনের মানসিক সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি করে, যা রোগীর মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন
সুস্থ জীবনের জন্য জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
- নিয়মিত ঘুম: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জাগা মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয় এবং মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখে।
- ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম, হাঁটা, বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং মস্তিষ্কে এন্ডরফিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- মেডিটেশন: ধ্যান ও শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম মনকে স্থির করে এবং উদ্বেগ কমায়।
- মাদক পরিহার করা: ধূমপান, অ্যালকোহল, বা অন্যান্য মাদকদ্রব্য মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্মক ক্ষতি করে। এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত।
- পজিটিভ চিন্তা করা: নিজের প্রতি ভালোবাসা, আত্ম-সম্মান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী থাকা মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মানসিক রোগ প্রতিরোধে করণীয়
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
একজন মানুষ মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন তখনই, যখন তিনি পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সহায়তা পান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো, খোলামেলা আলোচনা করা এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সামাজিক বন্ধন একজনকে নিরাপত্তা ও ভালোবাসা অনুভব করায়, যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা
নিজের অনুভূতি, আবেগ এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। যদি আপনি অনুভব করেন যে, আপনি অতিরিক্ত চাপ, বিষণ্নতা বা উদ্বেগে ভুগছেন, তাহলে তা অস্বীকার না করে স্বীকার করুন। মানসিক দিনচর্যার একটি অংশ হিসেবে প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন—যেমন বই পড়া, গান শোনা, হাঁটাহাঁটি করা বা ধ্যান করা।
প্রয়োজনে মানসিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া
অনেকেই মানসিক সমস্যাকে গোপন রাখেন বা উপেক্ষা করেন। এতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই যদি আপনি বুঝতে পারেন আপনার চিন্তাভাবনা ও আচরণে পরিবর্তন এসেছে, তাহলে দেরি না করে মানসিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সুস্থ জীবনযাপন করা
সুস্থ জীবনযাপন মানে শুধু শরীরচর্চা নয়—এটি মানসিক স্বাস্থ্যের সাথেও সরাসরি সম্পর্কিত। সময়মতো ঘুম, সুষম খাদ্য গ্রহণ, মাদকবর্জন, পর্যাপ্ত পানি পান, এবং নিয়মিত ব্যায়াম—এসব অভ্যাস মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর রুটিন ও ইতিবাচক মনোভাবই একজনকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখে।
কেন Rehabilitation BD সবচেয়ে ভালো মানসিক চিকিৎসা সেবা দেয়?
Rehabilitation BD মানসিক রোগীদের জন্য আধুনিক, নিরাপদ এবং বিশ্বস্ত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। আমাদের কিছু বৈশিষ্ট্য যা অন্যদের থেকে আলাদা করে:
পেশাদার সাইকিয়াট্রিস্ট ও থেরাপিস্ট
আমাদের সেন্টারে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা ও মনিটরিং করে থাকেন।
নিরিবিলি ও সুরক্ষিত পরিবেশ
আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে রোগী মানসিকভাবে স্বস্তিতে থাকে।
উন্নত থেরাপি সেশন
গ্রুপ থেরাপি, ইনডিভিজুয়াল কাউন্সেলিং, আর্ট থেরাপি, মেডিটেশন সহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে আমরা চিকিৎসা প্রদান করি।
ব্যক্তিগত যত্ন ও পর্যবেক্ষণ
প্রতিটি রোগীর জন্য আলাদা কেয়ার প্ল্যান তৈরি করা হয় এবং তাকে মনিটর করা হয় প্রতিদিন।
পরিবারকে সহায়তা
রোগীর পরিবার যেন সঠিকভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তার জন্য আমরাও গাইডলাইন দিয়ে থাকি।
রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665
উপসংহার: মানসিক রোগী কারা? লক্ষণ কি?
মানসিক রোগ কোনো লজ্জার বিষয় নয়। এটি একটি চিকিৎসাযোগ্য অবস্থা। আমাদের উচিত এ নিয়ে সচেতন হওয়া, রোগীকে বুঝে নেওয়া এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো। মানসিক রোগী কারা? লক্ষণ কি? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা থাকলে আপনি নিজে যেমন সচেতন থাকবেন, তেমনি আপনার প্রিয়জনদেরও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারবেন।
আপনি বা আপনার কোনো পরিচিতজন যদি এই সমস্যার ভুক্তভোগী হন, তাহলে আর দেরি না করে Rehabilitation BD-এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমরা আছি, আপনার পাশে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)– মানসিক রোগী কারা? লক্ষণ কি?
মানসিক রোগ কী?
মানসিক রোগ হলো মনের অসুস্থতা, যা চিন্তা, অনুভূতি এবং আচরণে প্রভাব ফেলে। এটি চিকিৎসাযোগ্য।
একজন মানসিক রোগীকে কীভাবে চিনবেন?
যদি কেউ স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে দূরে সরে যায়, আচরণে পরিবর্তন আসে বা সবসময় মন খারাপ থাকে, তাহলে বুঝতে হবে তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।
মানসিক রোগ কি সারানো সম্ভব?
হ্যাঁ, সঠিক চিকিৎসা ও সহায়তা থাকলে মানসিক রোগ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
মানসিক রোগের জন্য কাদের সাহায্য নিতে হয়?
সাইকিয়াট্রিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, এবং থেরাপিস্টদের সাহায্য নেওয়া উচিত।
মানসিক রোগে খাবারের ভূমিকা কী?
সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মানসিক রোগীরা কী একা থাকতে চায়?
অনেক সময় মানসিক রোগীরা একাকীত্ব পছন্দ করে, যা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। পরিবার ও বন্ধুদের পাশে থাকা জরুরি।
মানসিক রোগের চিকিৎসা কোথায় করাব?
ঢাকার Rehabilitation BD একটি বিশ্বস্ত এবং আধুনিক মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যেখানে মানসিক রোগের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায়।