সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত—এই শব্দ দুটি একত্রে ভাবতেই অভিভাবকদের গায়ে কাঁটা দেয়। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের ফলে শিশু-কিশোররাও খুব সহজেই অপ্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্টের জগতে প্রবেশ করতে পারছে। এই অভ্যাস একসময় নেশায় পরিণত হয়। এটি শুধু মানসিক নয়, সামাজিক ও নৈতিকভাবে ক্ষতিকর।
পর্নোগ্রাফি কী?
পর্নোগ্রাফি হলো এমন ধরনের কনটেন্ট, যা মূলত যৌন উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তৈরি। এতে থাকে নগ্নতা, যৌন ক্রিয়া, কিংবা এর চিত্র, অডিও বা ভিডিও উপস্থাপন।
বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই কনটেন্ট অনায়াসেই পাওয়া যায়, যা ছোটদের জন্য ভয়ানক বিপদ ডেকে আনে।
রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665
কেন শিশু-কিশোররা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়?
সহজলভ্যতা: প্রযুক্তির কারণে প্রবেশাধিকার বেড়ে গেছে
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি পরিবারের শিশুদের হাতে থাকে—
- স্মার্টফোন
- ট্যাব
- ল্যাপটপ
- গেমিং কনসোল
এগুলো সবই ইন্টারনেট কানেকশনযুক্ত।
একটু ভুলে গিয়েই সন্তান ইউটিউবে গিয়ে অ্যালগরিদমের কারণে নানা ধরনের ভিডিও পেয়ে যায়। কিংবা বন্ধুরা লিঙ্ক দেয়, ক্লিক করেই দেখে ফেলে।
এমনকি Google বা Social Media-তে সামান্য ভুল শব্দ লিখলেও পর্ন-সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট এসে পড়ে।
ফলাফল:
বয়সে ছোট হলেও তারা সহজেই এগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, বিশেষ করে যদি পরিবার থেকে পর্যাপ্ত মনিটরিং বা পরামর্শ না আসে।
কৌতূহল: যৌনতা সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ
কিশোর বয়সে দেহে হরমোন পরিবর্তনের ফলে মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেক পরিবর্তন আসে। এই সময়—
- তারা যৌনতা কী তা জানতে চায়।
- কোথা থেকে শেখা উচিত, সে ধারণা না থাকলে ভুল মাধ্যমকে অনুসরণ করে।
অনেক পরিবারে যৌনতা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয় না। ফলে তারা—
- গুগলে সার্চ করে
- বন্ধুর থেকে শোনে
- কিংবা ভিডিও দেখে শেখে
ফলাফল:
একবার দেখার পর ব্রেইনে “ডোপামিন” ক্ষরণ হয়, যা আনন্দদায়ক অনুভূতি দেয়। পরে এটি একটি অভ্যাসে পরিণত হয় এবং ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে আসক্তি।
বন্ধুদের প্ররোচনা: সমাজ ও স্কুলের প্রভাব
স্কুল বা পাড়ার বন্ধুরা অনেক সময় নিজেদের অভিজ্ঞতা বা দেখা বিষয় শেয়ার করে। তখন শিশুটি ভাবতে পারে—
“ওরা তো দেখে, তাহলে আমিও দেখি।”
যদি সেই বন্ধুটি নিজে আসক্ত হয়, তবে সে চায় অন্যরাও তা দেখুক—এই ভাবনা থেকেই লিংক শেয়ার করা, একসঙ্গে দেখা ইত্যাদি হয়।
কেউ কেউ আবার ‘সাহস’ প্রমাণ করতে গিয়ে এইসব দেখার বা শেখার কাজ করে।
ফলাফল:
গ্রুপে গ্রুপে ভিডিও দেখা, সিক্রেট গ্রুপে পর্ন শেয়ার, কিংবা ব্লুটুথে বিনিময়—এসব মাধ্যমেও পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়ে।
একাকীত্ব ও মানসিক চাপ: পরিবারিক দূরত্বের খেসারত
যে শিশুরা—
- মা-বাবার কাছ থেকে পর্যাপ্ত ভালোবাসা পায় না,
- যারা কাজের কারণে একা সময় কাটায়,
- যাদের সঙ্গে কেউ কথা বলে না বা বোঝে না,
তারা নিজের আবেগকে সামাল দিতে গোপনে কিছু খুঁজে বেড়ায়। সেই খোঁজেই পায়—
- পর্ন সাইট
- গেমের ভেতরের অশ্লীলতা
- কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রলোভন
ফলাফল:
এভাবে তারা সান্ত্বনা খুঁজতে খুঁজতে পর্নকে আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে ফেলে, যেটা পরে নেশায় পরিণত হয়।
শিশুদের ওপর পর্নোগ্রাফির প্রভাব
যৌনতা সম্পর্কে ভুল ধারণা
শিশুরা যখন পর্নোগ্রাফি দেখে, তখন তারা মনে করে এটাই যৌনতা শেখার প্রকৃত উপায়। তারা জানে না যে এই ভিডিওগুলো মূলত বানানো, বিকৃত এবং বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। এর ফলে—
- শিশুরা বাস্তব জীবনে যৌন সম্পর্ক ও মানবিক আবেগের মূল্য অনুধাবন করতে পারে না।
- তারা মনে করে যৌন সম্পর্ক মানেই শারীরিক চাহিদা মেটানো, ভালোবাসা বা সম্মান সেখানে নেই।
- পরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গঠনে জটিলতা দেখা দেয় এবং সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়।
নারীদের প্রতি অশ্রদ্ধাবোধ জন্ম নেয়
পর্নোগ্রাফির প্রায় সব ভিডিওতেই নারীদেরকে উপস্থাপন করা হয় একটি ‘ভোগ্য পণ্য’ হিসেবে। এতে একজন কিশোর বা শিশু বুঝে উঠতে পারে না—
- নারীও একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তারও ইচ্ছা, আবেগ ও সম্মান রয়েছে।
- ফলে ধীরে ধীরে ছেলেদের মধ্যে নারীদের প্রতি সম্মান কমে যায়।
- কিশোরেরা নারীদেরকে ভালোবাসা নয়, বরং যৌন আকর্ষণের বস্তু হিসেবে ভাবতে শুরু করে।
এভাবে তৈরি হয় লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, নিপীড়নের মানসিকতা এবং ভবিষ্যতে পার্টনার রেসপেক্ট না করার মানসিক গঠন।
বিকৃত যৌনাচারে আগ্রহ তৈরি হয়
অনেক সময় পর্নোগ্রাফিতে এমন কনটেন্ট দেখানো হয় যা স্বাভাবিক নয়, যেমন:
- জোরপূর্বক সম্পর্ক
- সহিংস আচরণ
- যৌন হয়রানিমূলক বিষয়বস্তু
- অপ্রাকৃতিক বা বিকৃত যৌনচর্চা
এ ধরনের ভিডিও দেখার ফলে শিশুরা সেটাকেই স্বাভাবিক বা উত্তেজনাপূর্ণ মনে করে, এবং অনুকরণ করতে চায়। এর ফলে—
- তারা বাস্তব জীবনে অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে
- ছোট বয়সেই বিকৃত কল্পনায় বুঁদ হয়ে যায়
- অন্যদের ক্ষতি করার প্রবণতা বাড়ে
এই বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ানক, কারণ বিকৃত যৌনচর্চা কেবল ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক অপরাধেও রূপ নিতে পারে।
আসক্তি ও নপুংসকতা
শিশুরা যদি দীর্ঘ সময় ধরে পর্ন দেখার অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তবে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে একটি নেশা। এই নেশা ধীরে ধীরে তাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে দুর্বল করে দেয়।
মানসিক প্রভাব:
- মনোযোগের ঘাটতি
- আবেগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা
- বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্নতা
- বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা ও সামাজিক আতঙ্ক
শারীরিক প্রভাব:
- অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- যৌন উত্তেজনার প্রতি প্রতিক্রিয়া হ্রাস পায়
- ভবিষ্যতে যৌন দুর্বলতা বা নপুংসকতার সমস্যা দেখা দেয়
সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত কি না বুঝবেন যেভাবে

একাকীত্ব, বন্ধু ও আগ্রহের অভাব
ব্যাখ্যা:
একসময় যে সন্তান খেলাধুলা, ঘুরে বেড়ানো, বই পড়া বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসতো, হঠাৎ করেই এসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। সে একা থাকতে চায়, আগের মতো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বা যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। তার আগ্রহের জায়গাগুলো থেকে সরে আসা শুরু হয়।
কারণ:
যখন কোনো শিশু পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে, তখন সেটিই হয়ে ওঠে তার একমাত্র “আনন্দের” উৎস। ফলে বাস্তব জীবনের কার্যক্রম তার কাছে বিরক্তিকর ও নিষ্প্রাণ মনে হয়।
আপনার করণীয়:
✔ সন্তানকে সময় দিন
✔ তার পুরনো শখে ফেরাতে উৎসাহ দিন
✔ বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপে তার একাকীত্বের কারণ জানার চেষ্টা করুন
আচরণগত পরিবর্তন ও বিষণ্ণতা
ব্যাখ্যা:
আপনার সন্তান হঠাৎ করেই বদলে গেছে? আগের মতো প্রাণবন্ত নয়? অতিরিক্ত চুপচাপ থাকে? কিংবা হুটহাট রেগে যাচ্ছে?
এই ধরনের আচরণগত পরিবর্তন অনেক সময় পর্নোগ্রাফির প্রতি গোপন আসক্তির ফলাফল হতে পারে। শিশুরা নিজের কাজ নিয়ে অপরাধবোধে ভোগে, আর সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে না পারায় রাগ, বিষণ্ণতা বা চুপচাপ থাকা শুরু করে।
কী লক্ষ করবেন:
- ছোট ছোট কারণে রেগে যাওয়া
- কাউকে কিছু না বলে নিজের ঘরে অনেকক্ষণ থাকা
- কথাবার্তায় উদাসীনতা
- আগ্রহের জায়গায় ঝিম মেরে থাকা
আপনার করণীয়:
✔ রাগ বা বকা না দিয়ে ধৈর্য ধরে কথা বলুন
✔ আচরণগত পরিবর্তনের পেছনে কারণ জানার চেষ্টা করুন
✔ প্রয়োজনে কাউন্সেলিংয়ের কথা ভাবুন
গোপনীয়তা বাড়ানো
ব্যাখ্যা:
সন্তান যদি নিজের মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটার অন্য কারো হাতে দিতে চায় না, সবসময় লুকিয়ে ফোন ব্যবহার করে, কিংবা প্রতিবারই ব্রাউজিং হিস্টোরি ডিলিট করে দেয়—তাহলে বিষয়টি চিন্তার কারণ হতে পারে।
গোপনীয়তার কিছু লক্ষণ:
- ফোনে বারবার পাসওয়ার্ড বদলানো
- আপনার সামনে হঠাৎ ফোনের স্ক্রিন অফ করে ফেলা
- রাতে লুকিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা
- মোবাইল নিয়ে বাথরুমে যাওয়া
- ব্যক্তিগত রুমে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষণ থাকা
আপনার করণীয়:
✔ সরাসরি অভিযুক্ত না করে বন্ধুর মতো আলাপ করুন
✔ ফোনে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ ব্যবহার করুন
✔ প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহারের ব্যাপারে বোঝান
যৌন ভাষা বা আঁকাআঁকিতে আগ্রহ
ব্যাখ্যা:
সন্তান যদি হঠাৎ করে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে, যৌনতা নিয়ে অদ্ভুত মন্তব্য করে, কিংবা ছবি আঁকার সময় অশালীন কিছু আঁকে—তবে সেটা তার মস্তিষ্কে দেখা কোনো পর্ন কনটেন্টের প্রভাব হতে পারে।
এমন কিছু লক্ষণ:
- যৌন বিষয় নিয়ে আগ্রহ
- বন্ধুদের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক যৌন কথাবার্তা
- স্কুল বা ডায়েরিতে অশালীন চিত্র আঁকা
- ছোটদের জন্য অনুপযুক্ত কৌতূহল
আপনার করণীয়:
✔ শিশুকে যৌনতার সঠিক ধারণা দিন
✔ তার আচরণে যদি বিকৃত রূপ দেখা দেয়, তাহলে পেশাদার সাহায্য নিন
✔ কোন বন্ধুর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ শেখে, সেটিও বুঝার চেষ্টা করুন
কী করবেন সন্তান পর্নে আসক্ত হলে?
যৌনতার বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন
বয়স অনুযায়ী যৌন শিক্ষার গুরুত্ব
শিশুদের সঙ্গে যৌনতা বিষয়ে কথা বলা মানেই অশ্লীলতা শেখানো নয়। বরং বয়স উপযোগী যৌন শিক্ষা তাদের সঠিক ও সুস্থ দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সাহায্য করে।
ভয় নয়, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ
অনেক বাবা-মা বিষয়টি লুকাতে চায় বা রেগে যায়, যা উল্টো ফল দেয়। বরং সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ও ধৈর্যের মাধ্যমে তাকে বোঝানোই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
সঠিক তথ্য দিন
আপনি না বললে ইন্টারনেট বা বন্ধুদের কাছ থেকে ভুল তথ্য নেবে। তাই শরীরের পরিবর্তন, যৌনতা, সম্মতি ইত্যাদি বিষয়ে সহজ ভাষায় সত্য কথাগুলো বলুন।
স্মার্টফোন ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা ও মনিটরিং
Parent Control App ব্যবহার করুন
Google Family Link, Qustodio বা Safe Lagoon-এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে সন্তানের ফোনে কী হচ্ছে, তা আপনি সহজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
ব্রাউজার হিস্ট্রি নিয়মিত চেক করুন
সন্তান কী ধরনের ওয়েবসাইট ভিজিট করছে, সেটি খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে অ্যাডাল্ট কনটেন্ট ব্লকিং ফিচার চালু করুন।
নির্দিষ্ট সময়ের বেশি ফোন ব্যবহার নয়
Screen Time সীমিত করুন। উদাহরণস্বরূপ, দিনে ১ ঘন্টার বেশি YouTube, TikTok বা Instagram ব্যবহার করতে না দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ শেখান
খেলাধুলা ও শরীরচর্চা
সন্তানকে বাইরে খেলার সুযোগ দিন। শরীরচর্চা বা কোনো খেলাধুলায় অভ্যস্ত করলে শরীর ও মন ভালো থাকে।
শিল্প-সংস্কৃতিতে আগ্রহ সৃষ্টি করুন
সঙ্গীত, আঁকাআঁকি, নাচ, আবৃত্তি—যেকোনো একটি সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত করুন। এতে সময় কাটবে অর্থবহ কাজে এবং মন অন্যদিকে যাবে।
অনলাইন গেমের বিকল্প দিন
প্রযুক্তি থেকে একেবারে দূরে রাখা সবসময় সম্ভব নয়, তাই গঠনমূলক বা শিক্ষামূলক অ্যাপ ও গেমে আগ্রহ তৈরি করুন।
ছুটির দিনে নজরদারি বাড়ান
একসঙ্গে সময় কাটান
সপ্তাহের অন্তত ১ দিন পুরোটা সময় সন্তানকে দিন। তার সঙ্গে গল্প করুন, সিনেমা দেখুন, পার্কে ঘুরতে যান।
অফলাইন সময় বাড়ান
TV, মোবাইল ছাড়াও আনন্দ করার উপায় থাকুক ঘরে। যেমন: বোর্ড গেম, পাজল, রান্না শেখা ইত্যাদি।
হঠাৎ ফোন কেড়ে নেওয়া নয়
তার আচরণ বুঝে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনুন। হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা দিলে সে গোপনে আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়বে।
সন্তানের বন্ধুদের দিকে নজর দিন
বন্ধু নির্বাচন সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলুন
বন্ধুরা কেমন, কী করছে—এসব জানা জরুরি। কিন্তু তা যেন অত্যধিক কড়াকড়ি বা অবিশ্বাস না হয়।
খোলামেলা প্রশ্ন করুন
সন্তানের বন্ধুরা কি পর্ন দেখায় বা দেখার কথা বলে? এমন প্রশ্ন করুন কিন্তু কোনো ভয় সৃষ্টি না করে।
বন্ধুর পরিবার ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন
স্কুল বা পাড়ার বন্ধুর পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে অনেক বিষয় আগেভাগে জানা সম্ভব।
বিশেষ টিপস (Parenting Tips)
- সন্তানের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
- রাগ না করে শান্তভাবে বোঝান।
- ভালো আচরণে প্রশংসা করুন।
- ইমোশনাল বন্ড গড়ে তুলুন।
- প্রয়োজনে কাউন্সেলরের সহায়তা নিন।
সন্তানের জন্য বিকল্প কার্যক্রম
- সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ
- বই পড়া ও শেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি
- স্পোর্টস ক্লাব বা কিশোর সংগঠনে যুক্ত করা
- যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনে উৎসাহ দেওয়া
পেশাদার সহায়তা নেওয়া জরুরি কবে?
যখন আপনি লক্ষ করেন:
- সন্তান সবকিছুতেই উদাসীন
- অস্বাভাবিক আচরণ করছে
- বারবার স্মার্টফোনে গোপনীয়তা বজায় রাখছে
- পর্ন না দেখলে অস্থির হয়ে যাচ্ছে
তখন দেরি না করে Child Psychologist, Therapist বা Trusted Rehabilitation Center-এ যোগাযোগ করুন।
কেন Rehabilitation BD এই সমস্যার জন্য সেরা?
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষজ্ঞ দল
প্যারেন্ট কাউন্সেলিং ও কিড সাইকোথেরাপি
গোপনীয়তা বজায় রেখে সেবা প্রদান
বাংলা ভাষায় সহজবোধ্য সহায়তা
বাস্তবসম্মত গাইডলাইন ও সাপোর্ট
আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665
উপসংহার: সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত
সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত—এই সমস্যা ভয়ানক হলেও সমাধান অসম্ভব নয়। প্রয়োজন সচেতনতা, সংলাপ ও সঠিক পদক্ষেপ। আপনার ভালোবাসা ও মনোযোগই পারে সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে।
সন্তানকে সময় দিন, বোঝান, ভালোবাসুন—আর প্রয়োজনে Rehabilitation BD কে পাশে নিন।
প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)– সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত
আমি কীভাবে বুঝব যে আমার সন্তান পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত?
আপনার সন্তান যদি হঠাৎ করে গোপনীয়ভাবে মোবাইল ব্যবহার করে, যৌন ভাষায় কথা বলে, সামাজিকতা কমিয়ে দেয়, এবং একাকীত্ব পছন্দ করে—তাহলে এটি পর্নোগ্রাফি আসক্তির লক্ষণ হতে পারে।
পর্নোগ্রাফি কি শিশুর মস্তিষ্কে স্থায়ী প্রভাব ফেলে?
হ্যাঁ। পর্নোগ্রাফি শিশুর ব্রেইনের ডোপামিন লেভেল পরিবর্তন করে, যা মানসিক বিকাশ ব্যাহত করে এবং আসক্তি তৈরি করে। এটি ভবিষ্যতে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক গঠনে বাধা দিতে পারে।
সন্তানকে পর্ন থেকে দূরে রাখার জন্য পিতামাতারা কী করতে পারেন?
খোলামেলা আলোচনা, বয়স উপযোগী যৌনশিক্ষা, মোবাইলে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুক্ত করা এবং সময়মতো মানসিক সহায়তা নেওয়া খুবই কার্যকর।
শিশুরা এত কম বয়সে কীভাবে পর্নোগ্রাফিতে জড়ায়?
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় তারা কৌতূহলবশত ভিডিও বা ছবি দেখে ফেলতে পারে, যা আস্তে আস্তে অভ্যাস ও পরে আসক্তিতে রূপ নেয়।
সন্তান পর্নোগ্রাফি দেখতে দেখলে কি সঙ্গে সঙ্গে বকা দেওয়া উচিত?
না। রাগ বা শাস্তি শিশুর মধ্যে ভয় তৈরি করতে পারে। বরং ধৈর্য ধরে বন্ধুর মতো আলাপ করে বোঝানো উচিত, যাতে সে নিজের ভুল বুঝে ফিরতে পারে।
পর্ন আসক্তি কি চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো করা যায়?
অবশ্যই। অভিজ্ঞ সাইকোলজিস্ট, থেরাপি, অভিভাবক পরামর্শ এবং উপযুক্ত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিশুর পর্নোগ্রাফি আসক্তি কাটানো সম্ভব।
Rehabilitation BD কীভাবে আমার সন্তানকে সাহায্য করতে পারে?
Rehabilitation BD বাংলা ভাষায় সহজবোধ্য ও গোপনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকে। এখানে বিশেষজ্ঞ দল রয়েছে যারা শিশু ও কিশোরদের মানসিক সমস্যা, আসক্তি ও অভ্যাস পরিবর্তনে কার্যকর থেরাপি ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।