আসক্তির জন্য আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি

আসক্তির জন্য আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি

আসক্তি ও তার ভয়াবহতা

আসক্তি হলো এমন একটি মানসিক ও শারীরিক অবস্থা, যা একজন মানুষকে কোন নির্দিষ্ট বস্তু বা আচরণের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল করে তোলে। এটি ধীরে ধীরে ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক, কাজ এবং স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে এই সমস্যা আরও মারাত্মক হতে পারে।

এই ব্লগে আমরা  আসক্তির আধুনিক চিকিৎসার পদ্ধতি একটি সারসংক্ষেপ দেওয়ার চেষ্টা করব

আসক্তি কি?

আসক্তি (Addiction) হলো এমন এক মানসিক ও শারীরিক অবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোনো বস্তু, আচরণ বা কার্যকলাপের প্রতি এমনভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে যে, তা তার নিজের ক্ষতির কারণ হলেও তা থেকে নিজেকে সরাতে পারে না। এটি ধীরে ধীরে ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তিকে দুর্বল করে ফেলে এবং জীবনের নানা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আসক্তি মূলত দুই ধরনের হতে পারে:

পদার্থ নির্ভর আসক্তি 

এক্ষেত্রে ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট রাসায়নিক বা মাদকদ্রব্য গ্রহণে আসক্ত হয়ে পড়ে। যেমন:

  • মাদকদ্রব্য আসক্তি (Drugs): হেরোইন, ইয়াবা, কোকেইন, গাঁজা ইত্যাদির প্রতি নির্ভরশীলতা।
  • এলকোহল আসক্তি: অতিরিক্ত ও নিয়মিত মদ্যপান যা দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত করে।
  • নিকোটিন ও সিগারেট আসক্তি: ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের প্রতি মানসিক ও শারীরিক নির্ভরতা।

এই ধরনের আসক্তি শারীরিকভাবে ক্ষতিকর এবং নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে, যেমন লিভার ক্ষতি, হৃদরোগ, স্নায়বিক সমস্যা এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।

আচরণগত আসক্তি 

এটি এমন এক অবস্থা, যেখানে কোনো নির্দিষ্ট অভ্যাস বা আচরণে ব্যক্তির অতিরিক্ত ঝোঁক তৈরি হয়, যেমন:

  • পর্নোগ্রাফি আসক্তি: পর্ন কনটেন্ট দেখা এবং তার প্রতি নির্ভরশীলতা যা সম্পর্কের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
  • মোবাইল বা গেমিং আসক্তি: ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইলে সময় ব্যয় করা, যা মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা ও একাকীত্বের জন্ম দেয়।
  • ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদিতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা।
  • জুয়া খেলার আসক্তি: বারবার বাজি ধরা বা অনলাইন গেমিংয়ে অর্থ ব্যয় করা।

এই ধরণের আসক্তিও মানসিক স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করে এবং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নানা জটিলতা তৈরি করে।

রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665

আসক্তির লক্ষণসমূহ

  • নিজেকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়া
  • ক্ষতির জেনেও একই আচরণ বারবার করা
  • আচরণ বা পদার্থ ছাড়া অস্থির বা উদ্বিগ্ন বোধ করা
  • কাজ, পরিবার ও সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ হারানো
  • একাকীত্ব, হতাশা ও আত্মগ্লানিতে ভোগা

আসক্তি কেন হয়?

  • মানসিক চাপ বা ট্রমা
  • পরিবারিক সমস্যা বা সম্পর্কের জটিলতা
  • বন্ধুবান্ধব বা সামাজিক প্রভাব
  • জেনেটিক (বংশগত) কারণ
  • মনোবৈকল্য বা আত্মবিশ্বাসের অভাব

আসক্তির চিকিৎসা পদ্ধতি

আসক্তি একটি জটিল কিন্তু চিকিৎসাযোগ্য মানসিক ও শারীরিক অবস্থা। এটি শুধুমাত্র কোনো পদার্থ বা আচরণে বারবার নির্ভর করাই নয়, বরং জীবনের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাবও অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে। সৌভাগ্যবশত, আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ও কার্যকর বহু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। নিচে ধাপে ধাপে এই চিকিৎসাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখানো হলো।

ডিটক্সিফিকেশন (Detoxification)

অর্থ ও উদ্দেশ্য
ডিটক্স বা ডিটক্সিফিকেশন হল আসক্তি চিকিৎসার সূচনা ধাপ। এই পর্যায়ে মাদক বা আসক্তিকর পদার্থকে সম্পূর্ণভাবে শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য হল—

  • শারীরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • শরীরকে পরবর্তী মানসিক চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা

ডিটক্সের সময় দেখা দিতে পারে যেসব উপসর্গ:

  • শরীর কাঁপা
  • অতিরিক্ত ঘাম
  • উদ্বেগ বা আতঙ্ক
  • মেজাজ খারাপ হওয়া
  • ঘুমের সমস্যা
  • হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

কেন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান জরুরি?
ডিটক্স প্রক্রিয়ায় শারীরিক প্রতিক্রিয়া (withdrawal symptoms) মারাত্মক হতে পারে। বিশেষ করে অ্যালকোহল, হিরোইন বা ঘন ঘন ব্যবহৃত ওষুধের আসক্তির ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসক ও মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে ডিটক্সিফিকেশন করা অত্যাবশ্যক।

থেরাপি

থেরাপি কী?
আসক্তি শুধুমাত্র শারীরিক নয়, এটি মানসিক ও আবেগজনিতও। থেরাপি এই দিকগুলোকে লক্ষ্য করে কাজ করে। এটি আসক্ত ব্যক্তির চিন্তা-পদ্ধতি, আবেগ এবং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে।

প্রচলিত থেরাপির ধরনসমূহ:

Cognitive Behavioral Therapy (CBT)

  • নেতিবাচক চিন্তা চিহ্নিত করে তা প্রতিস্থাপন করে ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে
  • নিজের আচরণ বুঝতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতের বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে শেখায়

Dialectical Behavior Therapy (DBT)

  • আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সহনশীলতা শেখায়
  • আত্ম-অনুভূতি ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে

Family Therapy

  • পরিবারের সদস্যদেরও চিকিৎসার আওতায় আনা হয়
  • সম্পর্কের জটিলতা দূর করে একটি সহানুভূতিশীল পরিবেশ তৈরি করা হয়

থেরাপির উপকারিতা:

  • আত্মনিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়
  • চাপ ও উদ্বেগ কমে
  • সমাজে এবং পরিবারের সাথে সম্পর্ক উন্নত হয়
  • রিল্যাপ্সের ঝুঁকি কমে যায়

চিকিৎসা সহায়ক ওষুধ

সব ধরনের আসক্তির চিকিৎসায় থেরাপি যথেষ্ট নয়। অনেক সময় শারীরিকভাবে ক্ষতি কমাতে ও পুনরায় আসক্তি প্রতিরোধে ওষুধ ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

প্রচলিত ওষুধ ও প্রয়োগ ক্ষেত্র:

আসক্তির ধরনওষুধের নামকাজ
Opioid আসক্তিMethadone, BuprenorphineWithdrawal কমায়, আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করে
Alcohol আসক্তিDisulfiram, Naltrexoneমদ্যপান করলে শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে
Nicotine আসক্তিNicotine patches, Bupropionধূমপান ছাড়তে সহায়তা করে

ওষুধ ব্যবহারের কারণ:

  • Withdrawal উপসর্গ সহনীয় করা
  • রিল্যাপ্স প্রতিরোধ
  • থেরাপির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা

মনোযোগযোগ্য: এই ওষুধগুলো কখনোই নিজের ইচ্ছেমতো গ্রহণ করা উচিত নয়। এটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট ডোজে ব্যবহার করতে হবে।

গ্রুপ থেরাপি ও সাপোর্ট গ্রুপ

 আসক্তির আধুনিক চিকিৎসার পদ্ধতি
আসক্তির আধুনিক চিকিৎসার পদ্ধতি

একাকীত্ব ও হীনমন্যতা আসক্তদের মধ্যে প্রচলিত সমস্যা। এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে সমান অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা অত্যন্ত সহায়ক।

সাপোর্ট গ্রুপ কী?
সাপোর্ট গ্রুপ হলো এমন একটি সংগঠিত পরিবেশ, যেখানে আসক্ত ব্যক্তি অন্যদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারে। এতে:

  • আত্মবিশ্বাস বাড়ে
  • একাকীত্ব দূর হয়
  • নিয়মিত মনিটরিং হয়

বিখ্যাত সাপোর্ট গ্রুপ উদাহরণ:

  • Narcotics Anonymous (NA)
  • Alcoholics Anonymous (AA)

উপকারিতা:

  • পরস্পরের থেকে শিক্ষা গ্রহণ
  • অভিজ্ঞতা বিনিময়
  • সামাজিক চাপের মোকাবিলায় সহায়তা

ইনপেশেন্ট বনাম আউটপেশেন্ট রিহ্যাব

আসক্তির চিকিৎসায় বিভিন্ন স্তরের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:

ইনপেশেন্ট রিহ্যাব (Inpatient Rehabilitation)

  • রোগীকে একটি নির্দিষ্ট সময় রিহ্যাব সেন্টারে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়
  • ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা সহায়তা পাওয়া যায়
  • কঠিন ও গুরুতর আসক্তির জন্য উপযুক্ত

আউটপেশেন্ট রিহ্যাব (Outpatient Rehabilitation)

  • রোগী প্রতিদিন বা নির্ধারিত দিনে চিকিৎসা নিতে আসে
  • চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে যায়
  • হালকা বা প্রাথমিক আসক্তির ক্ষেত্রে কার্যকর

তফাত তুলনামূলকভাবে:

বিষয়ইনপেশেন্টআউটপেশেন্ট
অবস্থানরিহ্যাবে থাকতে হয়নিজ বাসায় থাকতে পারে
সময়কাল৩০-৯০ দিনকয়েক মাস পর্যন্ত
চিকিৎসার গভীরতাঅধিকতর গভীরসীমিত পর্যায়ে
উপযুক্ত কারাগুরুতর আসক্ত, রিল্যাপ্স প্রবণসদ্য আসক্ত, সামাজিক সাপোর্ট আছে এমন

জীবনধারা পরিবর্তন ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা

চিকিৎসার পাশাপাশি সুস্থ জীবনধারা গ্রহণ না করলে পুনরায় আসক্তিতে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই আসক্তি নিরাময়ের পরে একটি দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন পরিকল্পনা জরুরি।

কীভাবে জীবনধারা পরিবর্তন করবেন:

  • প্রতিদিনের একটি রুটিন তৈরি করুন
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন
  • পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন
  • ধ্যান ও মেডিটেশন অভ্যাস করুন
  • মানসিক চাপ এড়াতে কাজের ভারসাম্য বজায় রাখুন

সফল পুনর্বাসনের চাবিকাঠি:

  • থেরাপি চালিয়ে যাওয়া
  • পরিবার ও সমাজের সমর্থন
  • ইতিবাচক বন্ধুবান্ধব নির্বাচন
  • সময়ে সময়ে চিকিৎসকের ফলোআপ

লাইফস্টাইল পরিবর্তন: সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি

আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জীবনকে সুস্থ ও স্থিতিশীলভাবে পরিচালনা করতে হলে জীবনধারায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নিচে এমন কিছু লাইফস্টাইল পরিবর্তনের কৌশল দেওয়া হলো যা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর।

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার কৌশল

মেডিটেশন:
প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন করলে মনের শান্তি বজায় থাকে। এটি মানসিক চাপ কমাতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ:
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, পেশী শিথিল করার ব্যায়াম বা Guided Imagery প্র্যাকটিস করলে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ হ্রাস পায়। এটি স্ট্রেসপূর্ণ পরিস্থিতিতে মনকে শান্ত রাখে।

কাউন্সেলিং:
একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত কাউন্সেলরের সাথে নিয়মিত সেশন করলে মানসিক সমস্যাগুলোর মূল কারণ চিহ্নিত করে তা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং পুরনো অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে।

ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম শরীর ও মনের জন্য খুবই উপকারী। এটি শুধু শরীরকে সুস্থ রাখে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

  • ব্যায়াম করলেই কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন কমে যায়
  • মন ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন যেমন ডোপামিন ও এন্ডোরফিন নিঃসৃত হয়
  • মনোযোগ ও আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ে

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়, যোগব্যায়াম বা হালকা শরীরচর্চা করা উচিত।

সুষম খাদ্যাভ্যাস

সঠিক পুষ্টি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। আসক্তি থেকে সেরে ওঠার সময় শরীর ও মস্তিষ্কের পুষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়।

  • খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, মৌসুমি ফল, প্রোটিন, এবং পূর্ণ শস্য রাখুন
  • অতিরিক্ত মিষ্টি, ক্যাফেইন, এবং ফাস্টফুড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পর্যাপ্ত ঘুম

ঘুমের অভাব মানসিক অস্থিরতা ও স্ট্রেসের অন্যতম কারণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।

  • প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন
  • ঘুমানোর আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করুন
  • শোবার ঘর যেন শান্ত, অন্ধকার এবং আরামদায়ক হয়, তা নিশ্চিত করুন

পুনরায় আসক্তি প্রতিরোধের উপায়

আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পুনরায় সেই অভ্যাসে ফিরে না যাওয়া। এজন্য একটি সুপরিকল্পিত রুটিন ও সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা দরকার।

কার্যকরী পরিকল্পনা তৈরি

দৈনন্দিন রুটিন অনুসরণ:
একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করলে ফাঁকা সময় কম থাকে এবং পুরনো অভ্যাস ফিরে আসার সম্ভাবনা কমে।

থেরাপি ও সাপোর্ট গ্রুপে অংশগ্রহণ:
নিয়মিত থেরাপিতে গেলে মানসিক চাপ মোকাবেলায় দক্ষতা বাড়ে। সাপোর্ট গ্রুপে অন্যদের অভিজ্ঞতা শুনে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় এবং নিজেকে একা মনে হয় না।

ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি এড়ানো:
যেসব পরিবেশ, ব্যক্তি বা পরিস্থিতি পুরনো অভ্যাসকে উসকে দিতে পারে, সেগুলো আগে থেকেই চিনে নিয়ে তা এড়ানো উচিত। যেমন, নেশাসঙ্গী বন্ধুদের সঙ্গে দেখা না করা, অথবা নির্দিষ্ট স্থান এড়িয়ে চলা।

পরিবেশ পরিবর্তন

নেতিবাচক পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসা:
আসক্তির সঙ্গে জড়িত যেকোনো স্থান, বস্তু বা মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা দরকার।

নতুন অভ্যাস গঠন:
নতুন পরিবেশে সৃজনশীল এবং স্বাস্থ্যকর কার্যক্রমে যুক্ত হোন। যেমন—

  • নতুন কিছু শেখা (সংগীত, ভাষা, রান্না)
  • বই পড়া
  • সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া

সমর্থন গ্রুপ

সাপোর্ট গ্রুপ এমন একটি নিরাপদ স্থান যেখানে আসক্তি থেকে মুক্ত ব্যক্তিরা একে অপরকে সাহায্য করে এবং উদ্বুদ্ধ করে। নিয়মিত এসব গ্রুপে অংশ নিলে নিচের সুবিধাগুলো পাওয়া যায়—

  • আবেগ ভাগাভাগি করা যায়
  • সঠিক দিকনির্দেশনা ও অভিজ্ঞতা শোনা যায়
  • আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে
  • নিজেকে দায়িত্বশীল রাখা যায়

কেন Rehabilitation BD সেরা প্ল্যাটফর্ম

অভিজ্ঞ এবং পেশাদার টিম

আমাদের কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, থেরাপিস্ট এবং নার্সিং টিম কাজ করে।

আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি

  • সর্বশেষ মনোরোগ থেরাপি
  • বৈজ্ঞানিক ডিটক্স পদ্ধতি
  • গ্রুপ এবং পারিবারিক থেরাপি

নিরাপদ ও সহানুভূতিশীল পরিবেশ

আমরা বুঝি আসক্তি একটি রোগ। এজন্য রোগীকে সম্মানের সাথে চিকিৎসা প্রদান করি।

ধাপে ধাপে সেবা

  • ভর্তি থেকে শুরু করে ফলোআপ পর্যন্ত সার্বিক সেবা
  • প্রতিটি রোগীর জন্য আলাদা পরিকল্পনা

সাশ্রয়ী খরচে মানসম্মত সেবা

Rehabilitation BD আপনাকে সাশ্রয়ী খরচে সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা সেবা দেয়।

রিহ্যাব সেবার জন্য ফ্রি কনসালটেশন নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: কল করুন: +88 01716623665

উপসংহার:  আসক্তির আধুনিক চিকিৎসার পদ্ধতি

আসক্তি থেকে মুক্তি সম্ভব, যদি সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নেওয়া হয়। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। ডিটক্স, থেরাপি, ওষুধ এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো—চিকিৎসা শুরু করার মানসিক প্রস্তুতি।

আপনি বা আপনার প্রিয়জন যদি আসক্তির সমস্যায় ভোগেন, তাহলে দেরি না করে আজই যোগাযোগ করুন Rehabilitation BD-এর সাথে। আমরা আপনার পাশে আছি।

 আসক্তির আধুনিক চিকিৎসার পদ্ধতি প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)

আসক্তি কি সত্যিই একটি রোগ?

 হ্যাঁ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) আসক্তিকে একটি মানসিক ও শারীরিক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য।

আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে কত সময় লাগে? 

সময় নির্ভর করে ব্যক্তির আসক্তির ধরন, গভীরতা এবং মানসিক প্রস্তুতির উপর। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসা কতটা গোপনীয়?

 Rehabilitation BD সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে চিকিৎসা প্রদান করে। রোগীর পরিচয় ও চিকিৎসার তথ্য গোপন রাখা হয়।

পরিবার কিভাবে রোগীকে সহযোগিতা করতে পারে? 

পরিবারের সমর্থন আসক্তি নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ। মনোবল বাড়ানো, থেরাপিতে অংশ নেওয়া এবং ধৈর্য ধরাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।

ওষুধ ছাড়াও কি চিকিৎসা সম্ভব? 

হ্যাঁ, অনেক ক্ষেত্রেই থেরাপি, সাপোর্ট গ্রুপ এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সফলভাবে চিকিৎসা সম্ভব। তবে কখনো কখনো ওষুধ সহায়ক ভূমিকা রাখে।

একজন ব্যক্তি যদি বারবার relaps করে, তাহলে কী করণীয়? 

এটা হতাশাজনক হলেও স্বাভাবিক। relaps রোধে সাপোর্ট গ্রুপ, থেরাপি ও নতুন কৌশল প্রয়োগ করা উচিত।

Rehabilitation BD তে কিভাবে ভর্তি হওয়া যায়? 

আমাদের হটলাইন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। কাউন্সেলিংয়ের পর উপযুক্ত চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top